দেওয়ান আবুল বাশার, মানিকগঞ্জ:
মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক মো. উজ্জ্বল মিয়ার বিরুদ্ধে সরকারি ডিউটি ফাঁকি দিয়ে প্রাইভেট ক্লিনিকে রোগী দেখার অভিযোগ উঠেছে। আজ বৃহস্পতিবার সরেজমিনে অনুসন্ধানে এর সত্যতা পাওয়া গেছে।
জানা যায়, ডাক্তার মো. উজ্জল মিয়ার সরকারি ডিউটির সময় সকাল আটটা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত। তবে দুপুর বারোটার সময় তাকে মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার কর্মস্থলে পাওয়া যায়নি। এ সময় তার ১১৮নং আউটডোর কক্ষের সহকারী ইমরান হোসেন জানান, “স্যার বাহিরে গেছে এখন তাকে পাওয়া যাবে না।” তবে একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করে, ডাক্তার উজ্জ্বল তখন মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডে অবস্থিত পপুলার হাসপাতালে রোগী দেখছিলেন।
অনুসন্ধানের সত্যতা যাচাই করতে দুপুর ১২ঃ৪৫ মিনিটে পপুলার হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, ডাক্তার উজ্জ্বল ওই হাসপাতালে তার চেম্বারে বসে রোগী দেখছেন। সেখানে রোগী সেজে ডাক্তারের সিরিয়াল নেওয়ার জন্য রাজিবের কাছে গেলে তিনি জানান, ডাক্তার ভেতরে আছেন এবং তাকে দেখাতে হলে ৮০০ টাকা ভিজিট দিতে হবে।
স্থানীয় সূত্রে আরও জানা গেছে, ডাক্তার উজ্জ্বল দীর্ঘদিন ধরেই সরকারি ডিউটি ফাঁকি দিয়ে পপুলার হাসপাতালে নিয়মিত রোগী দেখেন। এর আগেও বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় তার ডিউটি ফাঁকির বিষয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
এ বিষয়ে ডাক্তার উজ্জ্বল মিয়ার কাছে জানতে চাইলে তিনি দাবি করেন, “আমি অসুস্থ। একটা কাজে এখানে এসেছি।” তবে তিনি তার অসুস্থতার ধরণ বা “কাজের” বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি। মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক ডাক্তার মো. জহিরুল করিম এ বিষয়ে অবগত আছেন বলে জানান। তিনি বলেন, “সকাল ৮ থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত হাসপাতালের ডিউটি টাইম। কোন ডাক্তারের ব্যত্যয় করলে তার বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী রমজান মাহমুদ বলেন, সরকারি ডিউটির সময়ে ডাক্তারের প্রাইভেট চেম্বারে রোগী দেখার এসব ঘটনা স্বাস্থ্যখাতে অসন্তোষ সৃষ্টি করেছে। এমন কর্মকাণ্ড সরকারি স্বাস্থ্যসেবার প্রতি মানুষের আস্থা কমিয়ে দেবে। দ্রুত এইসব অর্থলোভী অসৎ ডাক্তারদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।